নেত্রকোনা ০৪:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কারণে ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে চান ককেশাসের মুসলমানরা,

  • আপডেট : ১২:২১:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর ২০২২
  • ৬৬

পূর্বকন্ঠ ডেস্ক: ইউক্রেনে যুদ্ধ করার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আংশিক সেনা সমাবেশের ঘোষণা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ককেশাস অঞ্চলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। বেশ কিছু সহিংস বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটেছে।,

তবে কাস্পিয়ান ও কৃষ্ণসাগরের মধ্যবর্তী পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী সার্কাসিয়ান এবং অন্য মুসলিম অনেকেই লাভজনক মাসিক বেতনের বিনিময়ে যুদ্ধ করতে ইচ্ছুক। আহমেদ উত্তর ককেশাসে বসবাসকারী একজন সার্কাসিয়ান খনি শ্রমিক। তিনি এমইইকে জানিয়েছেন, তিনি তার ছেলেকে সেনাবাহিনীতে চাকরি করতে রাজি করেছেন। ,

কারণ তাদের শহরে কয়েকটি পুরনো কারখানা এবং খনি ছাড়া অন্য কোনো চাকরি ছিল না। তিনি বলেন, একটি কারখানা বা একটি খনিতে কাজ খোঁজার চেয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা অনেক ভালো। আমরা এটি প্রত্যাখ্যান করতে পারি না। এতে অনেক টাকা।,

আহমেদ জানান, যদি তার ছেলে যুদ্ধে বেঁচে যায় এবং প্রতিশ্রুত অর্থ নিয়ে ফিরে আসে, তবে তিনি নতুন কোনো ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।,

ককেশাস রাশিয়ান ফেডারেশনের সবচেয়ে অবহেলিত অঞ্চল। এখানে বিনিয়োগ এবং শিল্পের অভাব রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, উত্তর বা পূর্ব রাশিয়ার মতো রুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলেই বেশি চাকরি রয়েছে। রাশিয়ার সবচেয়ে দরিদ্র অর্থনৈতিক অঞ্চল উত্তর ককেশীয় ফেডারেল ডিসট্রিক্ট। এ অঞ্চলের মাসিক ন্যূনতম মজুরি প্রায় ১৩ হাজার রুবল (২০৫ ডলার)। অথচ রুশ সরকার সৈন্যদের প্রতি মাসে এক লাখ ৩৫ হাজার রুবল (২ হাজার ১৩১ ডলার) দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।,

ইব্রাহিম, একজন নিয়োগপ্রাপ্ত সার্কাসিয়ান সৈনিক। তিনি জানান, লাভজনক বেতনের কারণে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধে যেতে রাজি হয়েছিলেন। শুরুতে তিনি ভেবেছিলেন, স্থানীয় কর্মকর্তারা তার কাছে পৌঁছানোর আগেই তার অর্থ কেটে নেবেন। তিনি বলেন, ‘তবে এ বেতনের অর্ধেক পেলেও তা আমাদের জন্য যথেষ্ট।’

তবে সবাই যে অর্থের লোভে যুদ্ধে যাচ্ছেন তা কিন্তু নয়। অনেকেই হুমকির ভয়ে যুদ্ধে যেতে রাজি হচ্ছেন। তারা জানিয়েছেন, যুদ্ধ করতে অস্বীকার করলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ প্রতিশোধ নেবে।,

কাম্বুলাত নামে কাবার্ডিয়ান গোত্রের আরেক সার্কাসিয়ান বলেন, আমি জানি ইউক্রেনে রাশিয়ার অবস্থা ভালো না। পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় কর্মকর্তারা যেন রাগ না করেন, এ জন্য ছেলেকে যেতে দিতে হবে বলে মনে হচ্ছে।,

শামিল নামে দাগেস্তানের একজন জানান, তার ছেলের পরিবর্তে রুশদের ইউক্রেনীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা উচিত। তার পরও তিনি তার ছেলেকে যুদ্ধে যেতে দিতে বাধ্য হয়েছেন।,

উল্লেখ্য, ইউক্রেন যুদ্ধে হাজার হাজার চেচেন যোদ্ধাদের মোতায়েন করা হয়েছে বলে মনে করা হয়। এ বছরের শুরুর দিকে কৃষ্ণসাগরের গুরুত্বপূর্ণ শহর মারিউপোল দখলে তাদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল।,

পুতিনের অনুগত হিসেবে পরিচিত চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ। তিনি রাশিয়ান ফেডারেশনের অন্তর্গত একটি আধাস্বায়ত্তশাসিত ককেশাস অঞ্চল চেচেন প্রজাতন্ত্রের প্রধান। রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধের সবচেয়ে বড় সমর্থক তিনি। এ অঞ্চলের অনেকেই কাদিরভকে ভয় পান। তার হুমকির ভয়েও যুদ্ধে যেতে বাধ্য হচ্ছেন চেচেনরা।,

সূত্র: মিডল ইস্ট আই,

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি। আমাদের প্রকাশনা “পূর্বকন্ঠ” স্বাধীনতার চেতনায় একটি নিরপেক্ষ জাতীয় অনলাইন । পাঠক আমাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরনা। পূর্বকণ্ঠ কথা বলে বাঙালির আত্মপ্রত্যয়ী আহ্বান ও ত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতার। কথা বলে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে। ছড়িয়ে দিতে এ চেতনা দেশের প্রত্যেক কোণে কোণে। আমরা রাষ্ট্রের আইন কানুন, রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশপ্রেম ও রাষ্ট্রীয় আইন বিরোধী এবং বাঙ্গালীর আবহমান কালের সামাজিক সহনশীলতার বিপক্ষে পূর্বকন্ঠ কখনো সংবাদ প্রকাশ করে না। আমরা সকল ধর্মমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কোন ধর্মমত বা তাদের অনুসারীদের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে আমরা কিছু প্রকাশ করি না। আমাদের সকল প্রচেষ্টা পাঠকের সংবাদ চাহিদাকে কেন্দ্র করে। তাই পাঠকের যে কোনো মতামত আমরা সাদরে গ্রহন করব।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় বণিক সমিতির সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর মতবিনিময়

যে কারণে ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে চান ককেশাসের মুসলমানরা,

আপডেট : ১২:২১:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর ২০২২

পূর্বকন্ঠ ডেস্ক: ইউক্রেনে যুদ্ধ করার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আংশিক সেনা সমাবেশের ঘোষণা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ককেশাস অঞ্চলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। বেশ কিছু সহিংস বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটেছে।,

তবে কাস্পিয়ান ও কৃষ্ণসাগরের মধ্যবর্তী পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী সার্কাসিয়ান এবং অন্য মুসলিম অনেকেই লাভজনক মাসিক বেতনের বিনিময়ে যুদ্ধ করতে ইচ্ছুক। আহমেদ উত্তর ককেশাসে বসবাসকারী একজন সার্কাসিয়ান খনি শ্রমিক। তিনি এমইইকে জানিয়েছেন, তিনি তার ছেলেকে সেনাবাহিনীতে চাকরি করতে রাজি করেছেন। ,

কারণ তাদের শহরে কয়েকটি পুরনো কারখানা এবং খনি ছাড়া অন্য কোনো চাকরি ছিল না। তিনি বলেন, একটি কারখানা বা একটি খনিতে কাজ খোঁজার চেয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা অনেক ভালো। আমরা এটি প্রত্যাখ্যান করতে পারি না। এতে অনেক টাকা।,

আহমেদ জানান, যদি তার ছেলে যুদ্ধে বেঁচে যায় এবং প্রতিশ্রুত অর্থ নিয়ে ফিরে আসে, তবে তিনি নতুন কোনো ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।,

ককেশাস রাশিয়ান ফেডারেশনের সবচেয়ে অবহেলিত অঞ্চল। এখানে বিনিয়োগ এবং শিল্পের অভাব রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, উত্তর বা পূর্ব রাশিয়ার মতো রুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলেই বেশি চাকরি রয়েছে। রাশিয়ার সবচেয়ে দরিদ্র অর্থনৈতিক অঞ্চল উত্তর ককেশীয় ফেডারেল ডিসট্রিক্ট। এ অঞ্চলের মাসিক ন্যূনতম মজুরি প্রায় ১৩ হাজার রুবল (২০৫ ডলার)। অথচ রুশ সরকার সৈন্যদের প্রতি মাসে এক লাখ ৩৫ হাজার রুবল (২ হাজার ১৩১ ডলার) দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।,

ইব্রাহিম, একজন নিয়োগপ্রাপ্ত সার্কাসিয়ান সৈনিক। তিনি জানান, লাভজনক বেতনের কারণে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধে যেতে রাজি হয়েছিলেন। শুরুতে তিনি ভেবেছিলেন, স্থানীয় কর্মকর্তারা তার কাছে পৌঁছানোর আগেই তার অর্থ কেটে নেবেন। তিনি বলেন, ‘তবে এ বেতনের অর্ধেক পেলেও তা আমাদের জন্য যথেষ্ট।’

তবে সবাই যে অর্থের লোভে যুদ্ধে যাচ্ছেন তা কিন্তু নয়। অনেকেই হুমকির ভয়ে যুদ্ধে যেতে রাজি হচ্ছেন। তারা জানিয়েছেন, যুদ্ধ করতে অস্বীকার করলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ প্রতিশোধ নেবে।,

কাম্বুলাত নামে কাবার্ডিয়ান গোত্রের আরেক সার্কাসিয়ান বলেন, আমি জানি ইউক্রেনে রাশিয়ার অবস্থা ভালো না। পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় কর্মকর্তারা যেন রাগ না করেন, এ জন্য ছেলেকে যেতে দিতে হবে বলে মনে হচ্ছে।,

শামিল নামে দাগেস্তানের একজন জানান, তার ছেলের পরিবর্তে রুশদের ইউক্রেনীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা উচিত। তার পরও তিনি তার ছেলেকে যুদ্ধে যেতে দিতে বাধ্য হয়েছেন।,

উল্লেখ্য, ইউক্রেন যুদ্ধে হাজার হাজার চেচেন যোদ্ধাদের মোতায়েন করা হয়েছে বলে মনে করা হয়। এ বছরের শুরুর দিকে কৃষ্ণসাগরের গুরুত্বপূর্ণ শহর মারিউপোল দখলে তাদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল।,

পুতিনের অনুগত হিসেবে পরিচিত চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ। তিনি রাশিয়ান ফেডারেশনের অন্তর্গত একটি আধাস্বায়ত্তশাসিত ককেশাস অঞ্চল চেচেন প্রজাতন্ত্রের প্রধান। রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধের সবচেয়ে বড় সমর্থক তিনি। এ অঞ্চলের অনেকেই কাদিরভকে ভয় পান। তার হুমকির ভয়েও যুদ্ধে যেতে বাধ্য হচ্ছেন চেচেনরা।,

সূত্র: মিডল ইস্ট আই,